গুজরাট বনাম চেন্নাইয়ের লড়াই ছাপিয়ে গুরু-শিষ্যের দ্বৈরথ মঞ্চায়িত হলো এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে। যেখানে গুরু মহেন্দ্র সিং ধোনির অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গেল হার্দিক পান্ডিয়ার তারুণ্য। চলতি আসরের প্রথম কোয়ালিফায়ারে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গুজরাটকে ১৫ রানে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে গেল ধোনি বাহিনী। এ নিয়ে রেকর্ড দশমবারের মতো ফাইনালে চারবারের চ্যাম্পিয়ন চেন্নাই।
ব্যাট হাতে ঝড় ওঠে কদাচিৎ। তবে ধোনি খেলেন মাথা দিয়ে। তার বুদ্ধিদীপ্ত অধিনায়কত্বই ব্যবধান গড়ে দেয় ম্যাচে। যার প্রমাণ আরেকবার দেখা গেল আজ। ম্যাচ তখনো ঝুলছিল দুদিকেই। ১২ বলে জয়ের জন্য গুজরাটের প্রয়োজন ৩৫। খুব একটা কঠিন সমীকরণ ছিল না। ব্যাট হাতে তখন থিতু হয়ে গেছেন রশিদ খান। ১৯তম ওভারের প্রথম বলটিতে দেশপান্ডেকে বাউন্ডারি ছাড়া করে ঝড় তোলার বার্তাই দিচ্ছিলেন রশিদ।
বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাট হাতে ঝলক দেখানো আফগান এই তারকা আশা দেখাচ্ছিলেন গুজরাটকে। উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো ম্যাজিকম্যান ধোনি কিছু একটা ভাবলেন। অফসাইডে ফিল্ডার বাড়ালেন। দ্রুত ডেভন কনওয়েকে সরিয়ে নিলেন ডিপ পয়েন্টে। ব্যস! তৃতীয় বলটি সেখানেই মারলেন রশিদ। জায়গা থেকে একটুও নড়তে হলো না কনওয়েকে। সাজঘরে ফিরলেন রশিদ। মূলত সেখানেই শেষ প্রদীপ নিভে যায় গুজরাটের।
মঙ্গলবার চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে প্রথম কোয়ালিফায়ারে টস জিতে গুজরাট টাইটান্সের অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান করে চেন্নাই।
এ দিন শুরুটা ভালো করেন চেন্নাইয়ের দুই ওপেনার ঋতুরাজ গায়কওয়াড় ও ডেভন কনওয়ে। ওপেনিং জুটি থেকে আসে ৮৭ রান। ১০.৩ ওভারে মোহিত শর্মার বলে মিলারের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ঋতুরাজ। ৪৪ বলে ৭টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৬০ রান করেন তিনি। ওয়ান ডাউনে নেমে ১ রান করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে শিবম দুবেকে। তাকে সরাসরি বোল্ড করেছেন নূর আহমেদ।
দলীয় ৯০ রানে ২ উইকেট হারানোর পরে ২০ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন ডেভন কনওয়ে ও অজিঙ্কা রাহানে। ১০ বলে ১৭ রান করে বিদায় নেন অজিঙ্কা। স্কোরবোর্ডে ৪ রান যুক্ত হতেই সাজঘরে ফেরেন কনওয়ে। তাতে রানের গতি কমে আসে। এরপরে ১৬ বলে ২২ রান করেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং ৪ বলে ৯ রান করেন মঈন আলী।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে খেলতে ১৭৩ রানের লক্ষ্য ছিল গুজরাটের। তবে রান তাড়া করতে নেমে স্বস্তিতে ছিল না হার্দিকরা। ঋদ্ধিমান সাহা এবং শুভমান গিলের উদ্বোধনী জুটি ভালো শুরু পেলেও খেই হারিয়ে ফেলেন। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান শুভমান এদিন আউট হয়ে যান ব্যক্তিগত ৪২ রানেই। দলের বিপদে তিন নম্বরে নেমেছিলেন হার্দিক। কিন্তু বেশিক্ষণ টানতে পারলেন না।
গুজরাটকে যারা ম্যাচের পর ম্যাচ জিতিয়েছেন, সেই ডেভিড মিলার, রাহুল টেওয়াটিয়াও চূড়ান্ত ব্যর্থ। একমাত্র রশিদ খান একটু হলেও চেষ্টা করেছিলেন। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে আউট হওয়ায় আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ বলে ৩০ রান। শেষ পর্যন্ত সবকটি উইকেট হারিয়ে গুজরাটের ইনিংস থামে ১৫৭ রানে। ১৫ রানের জয়ে ফাইনালে উঠে গেছে চেন্নাই। আগামী রোববার ফাইনালে তারা মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জেতা দলের বিপক্ষে।