এম এস আকাশ: ১৯৭১ সালের এই দিনে (২২ চৈত্র, ৫ এপ্রিল) মাইজভান্ডারী আশেক-ভক্তরা উড়ালো লাল-সবুজ পতাকা উড়িয়ে মাইজভান্ডার শরীফ আসেন। তখন মাইজভান্ডারের সব ভবনেও উত্তোলন করা হয় লাল সবুজ পতাকা।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ২৮ মার্চ হযরত গোলাম রহমান বাবা ভান্ডারী (ক.) মহান ২২ চৈত্র বার্ষিক ওরশ শরীফ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা চলছিল হুজরা শরীফে। তখন সারাদেশে যুদ্ধ চলছে। পাকিস্থানী বাহিনী ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। তাই হযরত দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারীর (কঃ) উপস্থিত ভক্তদের বলেন, দেশে নাজুক পরিস্থিতি। ওরশে যেন সবাই সকাল-সকাল আসেন। আছরের নামাজের পর তবারুক বিতরন করা হবে। লোকজন যাতে সন্ধ্যার পূর্বেই বাড়ি ফিরতে পারেন। এমন সময় বখতপুর নির্বাসী সৈয়দ বখতেয়ার ফকির কিভাবে আসবেন ? জানতে চাইলেন। হযরত দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী (ক.) পাল্টা প্রশ্ন করে তার ইচ্ছা জানতে চাইলেন।
তখন তিনি বলেন, বাংলাদেশের পতকা উড়িয়ে, গরু-মহিষ হাদীয়াসহ ঢোল বাজনা বাজিয়ে জাঁকজমক ভাবে আসতে চাই। হযরত দেলাওর হোসাইন মাইজভান্ডারী এ বাক্যে সম্মতি দিলেন। তখন সৈয়দ বখতেয়ার ফকির আনন্দিত হয়ে মুর্শিদকে ভক্তি জানালেন।
উপস্থিত ভক্ত আশেকানদের বললেন, বাংলাদেশ কবুল হয়েছে। হযরত দেলাওর হোসাইন মাইজভাণ্ডারী (কঃ) পতকা উড়াতে অনুমতি দিয়েছেন। এ পতকা উড়তে থাকবে। বাঙ্গালীদের জয় সুনিশ্চিত। ঐ ওরশে সকল ভক্ত আশেকান ঠিক সেভাবে বাংলাদেশের পতকা উড়িয়ে মাইজভান্ডার শরীফ আসেন। পথে পথে অনেক স্থানে পকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দেখেও কোন বাঁধা দেননি। আর এদিকে মাইজভাণ্ডার শরীফ ৫ এপ্রিল প্রকাশ্যে উড়ে বাঙ্গালীজাতীর আশা আকঙ্খার লাল সবুজের পতকাটি।
উল্লেখ্য, সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবাভান্ডারী (ক.) ১৮৬৫ ঈসাব্দ এবং ১২৭০ বঙ্গাব্দের (পঞ্জিকা মতে ২৭ আশ্বিন) ২৯ আশ্বিন সোমবার ভোরবেলা জন্মগ্রহণ করেন। ১৩৪৩ বাংলার ২২ চৈত্র, মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে পবিত্র অমরধামে শুভযাত্রা করেন। প্রতিবছর এ দিনে ফটিকছড়ি মাইজভাণ্ডার দরবার শরীফস্থ গাউছিয়া রহমানিয়া মন্জিলে তাঁর বার্ষিক ওরশ শরীফ উদ্যাপিত হয়।